জামালপুর সংবাদ ডেস্ক:
দেশের সাধারণ জনগণের কাছাকাছি সরকারি সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। তারা সরকারি সকল সিদ্ধান্তের সঠিক বাস্তবায়নসহ জনগণের প্রকৃত সেবায় নিয়োজিত হবেন-এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু দায়িত্বের বাইরে গিয়েও অনেক সময় যখন কোনো কোনো সরকারি কর্মকর্তা সাধারণ জনগণকে ভালো রাখার জন্য দিনরাত কাজ করেন, আর তাদের কাজের ধারাবাহিক গতি যখন অস্বাভাবিকভাবে ভালো হয়, তখন তারা আপামর জনতার শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত হন।
এর মধ্যে ব্যতিক্রম জনবান্ধব, পরিশ্রমী এমনই একজন মানবিক মনের মানুষ জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তৌহিদুর রহমান । যোগদানের পর থেকেই নিজ কর্মগুণে তিনি জয় করেছেন ইসলামপুর উপজেলাবাসীর মন।
সরকারি অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন যাদের নাম শুনলেও সাধারণ মানুষ নেতিবাচক মন্তব্য ছুড়ে দেন হরহামেষাই। তবে এরমধ্যে অনেক ভালো কর্মকর্তাও রয়েছেন। যাদের দক্ষতা, মার্জিত ব্যবহার, জনমূখী কর্মকান্ড, পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন, ন্যায় পরায়নতা ও সেবা গ্রহিতাদের কথা ধৈর্য্যরে সাথে শ্রবন করে সমাধান বের করে দেওয়া, গন্ডির বাইরে গিয়েও বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত রেখে চলেছেন প্রতিনিয়ত সেই উধার মনের মানুষ ইসলামপুরের ইউএনও তৌহিদুর রহমান ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন ‘প্রতিভা কোনো সীমাবদ্ধ সিদ্ধিতে সন্তুষ্ট থাকে না, অসন্তোষই তার জয়যাত্রা পথের সারথী’। এটাই সত্য একজন কর্মদক্ষ, ন্যায় পরায়ন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পারেন দক্ষতার মাধ্যমে একটি উপজেলার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে। এমনই একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হলেন- ইসলামপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুর রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ৫ আগষ্টের পর নানাবিধ কারনেই মাঠ প্রশাসনে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সামলানোর পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ, পৌরসভায় দায়িত্ব পালন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি’র পদে থাকার কারনে নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাজের পরিধি আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কাজের চাপ বৃদ্ধি পেলেও এ উপজেলার নাগরিক সেবার মান একটুও কমেনি। বরং আগের চেয়ে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুন।
এছাড়াও নির্মল পরিবেশ ও সবুজায়ন নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জুলাই বিপ্লব বিতর্ক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করে তরুন প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন এ উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ইসলামপুর পৌরসভায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার থেকে নাগরিকদের সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে পূর্বের তুলনায় শতগুন।
ইতিমধ্যে ইসলামপুর উপজেলা ও পৌরসভাকে একটি আধুনিক পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি ও তরুন প্রজন্মকে সাথে নিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
ইসলামপুর উপজেলায় যোগদানের ৬ মাসের মধ্যে ইউএনও তৌহিদুর রহমান উপজেলার উন্নয়নে অসংখ্য প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার কাছে আসা সব সেবা প্রার্থীকে তিনি হাসিমুখে কাঙ্খিত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে সম্পূর্ণরূপে দালালমুক্ত হয়ে সরকারি সেবা পেতে পারেন সেই উদ্যোগ নিয়েছেন।
ইসলামপুর উপজেলায় যোগদানের পর থেকে তার সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকান্ড ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান।
লক্ষনীয় একটি বিষয়, ইউএনও তার আরেকটি কাজ উপজেলাবাসীকে অবাক করেছে। তা হল মানুষ যখন যে কোন সমস্যা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে , তখন তিনি ওই পোস্টের কমেন্টে সরাসরি পরামর্শ কিংবা সমাধান দেওয়ার চেষ্ঠা করেন। ভাবা যায়, যেখানে গতানুগতিক ইউএনওরা ফেসবুক পোস্টে লাইক দিয়ে ভয় পায়, সেখানে তিনি জনগণের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দেয়া ফেসবুক পোস্টে সরাসরি কমেন্ট করে সমাধান দেন। এটা কি দেশের সকল ইউএনওদের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে না।
ইসলামপুর উপজেলাকে একটি উন্নত আধুনিক জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরালসভাবে কাজ করছেন তিনি। জনবান্ধব এই ইউএনও’র কর্মকান্ডের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উপজেলার ১১নং চরপুটিমারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সামছুজ্জামান সুরুজ মাষ্টার বলেন, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজন ব্যতিক্রমী জনবান্ধব কর্মকর্তা। তিনি ইসলামপুর উপজেলায় যোগদানের পর থেকে উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। নির্ভীকভাবে ছুটে চলেছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। প্রতিদিন হাসিমুখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলাবাসীর।
যোগদানের পর থেকে উপজেলার যেকোন অবৈধ ও অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার। তিনি কোন অভিযোগ পেলে তার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেন। তাছাড়া গণমাধ্যম ফেসবুক মুঠোফোনের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ দ্রুত সমাধান ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থানিয়ে সব শ্রেণি পেশা মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে এজন্য তিনি নিয়মিত জনস্বার্থে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন। বিগত কয়েকমাসে তিনি
অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে মোবাইলকোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জেল-জরিমানা করে বালু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনে এনেছেন।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তার সরব উপস্থিতি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতিমধ্যে তার সততা ,কর্মদক্ষতা ও পরিশ্রম দিয়ে মানুষের কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। আরও জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেকোনো সেবা পেতে এখন আর কারো দালালের শরণাপন্ন হতে হয় না। সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, কবি-সাহিত্যিক, সমাজসেবক, সাংবাদিকসহ নানা পেশার ব্যক্তিরা সরাসরি ইউএনওর কাছে গিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা, হতদরিদ্রদের আর্থিক সহায়তা, বৃক্ষরোপণ, যৌতুক প্রতিরোধ, ত্রাণ বিতরণ, এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
অপরদিকে ৫ আগষ্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পরে শিক্ষা ব্যবস্থায়। এ অবস্থায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নকল মুক্ত পরিবেশ পরীক্ষা গ্রহনসহ নানাবিদ পদক্ষেপ গ্রহন করেন।
ইউএনও তৌহিদুর রহমান বলেন,যেখানেই চাকুরী করেছি শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে নাগরিকদের সরকারী সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সরকারি স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সকলের সহযোগিতা নিয়ে একটি সুন্দর ইসলামপুর উপজেলা উপহার দিতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমি হয়তো একদিন এ উপজেলায় থাকবো না, থেকে যাবে আমার কর্ম। তাই কর্মের মাধ্যমে এ উপজেলাবাসীর মনে স্থান পেতে চাই যতদিন ইসলামপুর উপজেলায় আছি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাব। সর্বোপরি দায়িত্ব পালনে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চান তিনি।